নির্মাণ কাজ প্রকল্পটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে ধীরগতির পাশাপাশি নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
আগামী ১০০ বছরের স্থায়িত্বকাল ধরে নিয়ে ছয় ভেন্টবিশিষ্ট এ রেগুলেটরটি নির্মাণ করার কথা। যদিও প্রকল্প নিয়মিতভাবে তদারকি করার দাবি করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, এখানে নিম্নমানের কাজ করে পার পেয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সম্প্রতি এ প্রকল্প পরিদর্শনে এসে কাজের ধীরগতি দেখে দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়ে গেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরে ১৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কুমার নদ খননের যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তারই অংশ হিসেবে সোয়া ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মদনখালী রেগুলেটর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। নৌবাহিনীর হয়ে এই ঠিকাদারি কাজ বাস্তবায়ন করছে ফিউচার ইনফ্রাকচার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (এফআইডিএল) নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বুধবার সকালে সরেজমিনে প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটির বাস্তবায়নে সাইটে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কোনো সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। নিম্নমানের পাথর ও সিলেট বালু ছাড়াও ওপিসি মানের সিমেন্টের স্থলে পিপিসি সিমেন্ট এবং ৬০ গ্রেডের রডের বদলে ৪০ গ্রেডের রড ব্যবহার করা হচ্ছে। সিলেট বালু ও স্টোন চিপে ধুলা ভরা।
ওই এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোজাফফর হোসেন অভিযোগ করেন, শুরু থেকেই এভাবে কাজ চলছে। সিলেট বালুতে ধুলা মেশানো। আর কালো পাথরের স্থানে সাদা পাথর দিচ্ছে। একই অভিযোগ করেন ওই এলাকার অধিবাসী একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত যুবক শাহেদুল ইসলাম।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি কাজী নজরুল ইসলাম দাবি করেন, সাদা পাথর কিংবা কালো পাথর বলে সিডিউলে কোনো পার্থক্য নেই। সেখানে রয়েছে স্টোন চিপ। আর রড এবং সিলেট স্যান্ডও ল্যাবরেটরি পরীক্ষার পরেই ব্যবহারের অনুমতি মিলেছে। এখন পর্যন্ত কাজের ৩৫ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। চলতি ডিসেম্বরে শেষ হওয়া এ প্রকল্প মেয়াদ আরও বাড়বে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, মদনখালী স্লুইস গেটের স্থায়িত্বের ওপর ফরিদপুর শহরের স্থায়িত্ব নির্ভর করছে। তাই এই কাজ বাস্তবায়নে তিনি নিয়মিতই পরিদর্শন ও তদারকি করছেন।
তিনি বলেন, ‘সাইটে যে সিলেট বালু ও পাথরের মানহীনতার অভিযোগ উঠেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে সেগুলো পরীক্ষার পর ব্যবহারের অনুমতি দেবো।’ কোনোভাবেই মানহীন কাজের সুযোগ দেয়া হবে না বলে সতর্ক করেন তিনি।